সূরা ওয়াকিয়া ( Surah al-Waqiah ) পটভূমি এবং এর ফজিলত সমূহ
সুরা আল-ওয়াকিয়া ( al-waqiah ) পবিত্র কোরআনের ৫৬ নম্বর । সুরা আল ওয়াক্বিয়ার অর্থ নিশ্চিত ঘটনা। মুফাসসিরে কিরাম বলেন, ওয়াকিয়া ( Surah al-Waqiah ) অর্থ কিয়ামতও বটে। মক্কায় নাজিল হওয়া surah al-waqiah ( আল-ওয়াকিয়াহ ) অর্থাৎ এই সুরায় মহান আল্লাহর অনন্ত-অসীম ক্ষমতার বিবরণ স্থান পেয়েছে।
কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার বর্ণনা, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান বিষয়ে সন্দেহ পোষণকারীদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে এই surah al-waqiah ( আল-ওয়াকিয়াহ ) তে ।
হাশরের ময়দানের ভয়াবহতা, অগ্রবর্তী দলের পরিচয়, ডান-বাঁ দিকের লোকদের অবস্থান, আমল অনুযায়ী নিয়ামত ও আজাব ভোগের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিবরণ দেওয়া হয়েছে এই surah al-waqiah ( আল-ওয়াকিয়াহ ) য় ।
সুরা আল ওয়াকিয়া ( Surah al-Waqiah ) পাঠের ফজিলত সম্পর্কে একটি বিশেষ শিক্ষা পাওয়া যায় আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর সঙ্গে আমিরুল মুমিনিনের ( "বিশ্বাসীদের নেতা" ) বিশেষ কথোপকথন থেকে।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যখন অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন তখন ওসমান (রা.) তাঁকে দেখতে গিয়ে বলেন,
আপনার অসুখটা কী? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমার পাপ আমার অসুখ। ওসমান (রা.) বলেন, আপনার বাসনা কী? তিনি বলেন, আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি। তিনি বলেন, আমি সরকারি বায়তুল মাল থেকে কোনো উপঢৌকনের ব্যবস্থা করে দেব, যা আপনার এবং আপনার কন্যাদের উপকারে আসবে?
ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, এর কোনো প্রয়োজন নেই। আমি আমার কন্যাদের সুরা ওয়াকিয়া ( Surah al-Waqiah ) শিক্ষা দিয়েছি।
surah al-waqiah - সূরা ওয়াক্বিয়া বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
👉২১
وَلَحْمِ طَيْرٍ مِمَّا يَشْتَهُونَ
ওয়া লাহমি তাইরিম মিম্মা-ইয়াশতাহূন।
অর্থঃ
(মুফতী তাকী উসমানী)⇛
এবং তাদের চাহিদা মত পাখির গোশত নিয়ে
(মাওলানা মুহিউদ্দিন খান)⇛
এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে।
(ইসলামিক ফাউন্ডেশন)⇛
আর তাদের ঈপ্সিত পাখির গোশ্ত নিয়ে,
👉২২
وَحُورٌ عِينٌ
ওয়া হূরুন ‘ঈন।
অর্থঃ
(মুফতী তাকী উসমানী)⇛
এবং তাদের জন্য থাকবে আয়তলোচনা হুর
(মাওলানা মুহিউদ্দিন খান)⇛
তথায় থাকবে আনতনয়না হুরগণ,
(ইসলামিক ফাউন্ডেশন)⇛
আর তাদের জন্যে থাকবে আয়তলোচনা হ‚র,
👉২৩
كَأَمْثَالِ اللُّؤْلُؤِ الْمَكْنُونِ
কাআমছা-লিল লু’লুয়িল মাকনূন।
অর্থঃ
(মুফতী তাকী উসমানী)⇛
যেন তারা লুকিয়ে রাখা মুক্তা।
(মাওলানা মুহিউদ্দিন খান)⇛
আবরণে রক্ষিত মোতির ন্যায়,
(ইসলামিক ফাউন্ডেশন)⇛
সুরক্ষিত মুক্তাসদৃশ,
👉২৪
جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
জাঝাআম বিমা-কা-নূইয়া‘মালূন।
অর্থঃ
(মুফতী তাকী উসমানী)⇛
তাদের কৃতকর্মের প্রতিদানস্বরূপ।
(মাওলানা মুহিউদ্দিন খান)⇛
তারা যা কিছু করত, তার পুরস্কারস্বরূপ।
(ইসলামিক ফাউন্ডেশন)⇛
তাদের কর্মের পুরস্কারস্বরূপ।
👉২৫
لَا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا وَلَا تَأْثِيمًا
লা-ইয়াছমা‘ঊনা ফীহা-লাগওয়াওঁ ওয়ালা-তা’ছীমা-।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তারা সে জান্নাতে শুনবে না কোন অহেতুক কথা এবং না কোন পাপের কথা।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তারা তথায় অবান্তর ও কোন খারাপ কথা শুনবে না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
সেখানে তারা শুনবে না কোন অসার বা পাপবাক্য,
👉২৬
إِلَّا قِيلًا سَلَامًا سَلَامًا
ইল্লা-কীলান ছালা-মান ছালা-মা-।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তবে সেখানে হবে কেবল শান্তিপূর্ণ কথা, কেবলই শান্তিপূর্ণ কথা।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
কিন্তু শুনবে সালাম আর সালাম।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
‘সালাম’ আর ‘সালাম’ বাণী ব্যতীত।
👉২৭
وَأَصْحَابُ الْيَمِينِ مَا أَصْحَابُ الْيَمِينِ
ওয়া আসহা-বুল ইয়ামীনি মাআসহা-বুল ইয়ামীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আর যারা ডান হাত বিশিষ্ট, আহা, কেমন যে সে ডান-হাত বিশিষ্টগণ!
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আর ডানদিকের দল, কত ভাগ্যবান ডানদিকের দল!
👉২৮
فِي سِدْرٍ مَّخْضُودٍ
ফী ছিদরিম মাখদূদ।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
(তারা আয়েশে থাকবে) কাঁটাবিহীন কুল গাছের মাঝে ৭
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তারা থাকবে এমন উদ্যানে, সেখানে আছে কণ্টকহীন কুলবৃক্ষ,
✅ তাফসীরঃ
৭. পূর্বে বলা হয়েছে, আমাদেরকে বোঝানোর জন্য জান্নাতের ফলসমূহের নাম রাখা হয়েছে এই দুনিয়ায় ফল-ফলাদির নামেই। কিন্তু সে ফলের আকার-আকৃতি ও স্বাদ-সুবাস দুনিয়ার ফল অপেক্ষা অচিন্তনীয়রূপে উৎকৃষ্ট হবে। এক হাদীসে আছে, এক দেহাতী মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেছিল, কুল গাছ তো সাধারণত কষ্টদায়ক হয়ে থাকে। কুরআন মাজীদে এ গাছের কথা আসল কেন? মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তাআলা কি বলেননি, সে গাছে কাঁটা থাকবে না? আল্লাহ তাআলা প্রতিটি কাঁটার স্থানে একটি ফল সৃষ্টি করবেন। প্রতিটি ফলে থাকবে বাহাত্তর রকম স্বাদ। এক স্বাদ অন্য স্বাদের সাথে মিলবে না (রূহুল মাআনী, হাকিম ও বায়হাকীর বরাতে। হাকিম (রহ.) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)।
👉২৯
وَطَلْحٍ مَّنضُودٍ
ওয়া তালহিমমানদূ দ।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛ এবং কাঁদি ভরা কলা গাছ,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛ এবং কাঁদি কাঁদি কলায়,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛⇛⇛ কাঁদি ভরা কদলী বৃক্ষ,
👉৩০
وَظِلٍّ مَّمْدُودٍ
ওয়া জিলিলমমামদুদ।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
সুদূর বিস্তৃত ছায়া,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং দীর্ঘ ছায়ায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
সম্প্রসারিত ছায়া,
👉৩১
وَمَاءٍ مَّسْكُوبٍ
ওয়া মাইমমাছকূব।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
প্রবহমান পানি
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং প্রবাহিত পানিতে,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
সদা প্রবহমান পানি,
👉৩২
وَفَاكِهَةٍ كَثِيرَةٍ
ওয়া ফা-কিহাতিন কাছীরাহ।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এবং প্রচুর ফলমূলের ভেতর।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
ও প্রচুর ফল-মূলে,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
ও প্রচুর ফলমূল,
👉৩৩
لَّا مَقْطُوعَةٍ وَلَا مَمْنُوعَةٍ
লা-মাকতূ‘আতিওঁ ওয়ালা-মামনূ‘আহ।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
যা কখনও শেষ হবে না এবং যাতে কোন বাধাও দেওয়া হবে না।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
যা শেষ হবার নয় এবং নিষিদ্ধ ও নয়,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
যা শেষ হবে না ও যা নিষিদ্ধও হবে না।
👉৩৪
وَفُرُشٍ مَّرْفُوعَةٍ
ওয়া ফুরুশিমমারফূ‘আহ।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আর তারা থাকবে উঁচুতে রাখা ফরাশে। ৮
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আর থাকবে সমুন্নত শয্যায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আর সমুচ্চ শয্যাসমূহ;
✅ তাফসীরঃ
৮. কুরআন মাজীদের একাধিক জায়গায় বলা হয়েছে, জান্নাতীদের আসন হবে উঁচুতে। সেই আসনে থাকবে ফরাশ বিছানো। তাই বলা হয়েছে, তারা থাকবে উঁচুতে রাখা ফরাশে।
👉৩৫
إِنَّا أَنشَأْنَاهُنَّ إِنشَاءً
ইন্নাআনশা’না-হুন্না ইনশাআ।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
নিশ্চয়ই আমি সে নারীদেরকে দিয়েছি নব উত্থান। ৯
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি বিশেষরূপে-
✅ তাফসীরঃ
৯. কুরআন মাজীদ জান্নাতের নারীদেরকে বোঝানোর জন্য চমৎকার পন্থা অবলম্বন করেছে। সরাসরি তাদের নাম না নিয়ে কেবল সর্বনামের মাধ্যমে তাদের প্রতি ইশারা করে দিয়েছে। এর ভেতর যেমন সাহিত্যালংকারের স্বাদ রয়েছে, তেমনি নারীদের পর্দাশীলতার মর্যাদাও অক্ষুণ্ণ আছে। কোন কোন মুফাসসিরের মতে, জান্নাতবাসীদের জন্য যাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে বা সৃষ্টি করা হবে, এখানে সেই হুরদের কথাই বোঝানো হয়েছে। আবার কেউ বলেন, এরা হলেন নেককার লোকদের সেই জীবন সঙ্গিনীগণ, যারা নিজেরাও পুণ্যবতী। আখেরাতে তাদেরকে যে ‘নব উত্থান’ দেওয়া হবে, তার মানে দুনিয়ায় তাদের রূপ-লাবণ্য যেমনই থাকুক না কেন, আখেরাতে তাদেরকে তাদের স্বামীদের জন্য অপরূপ সুন্দরী বানিয়ে দেওয়া হবে, যেমন এক হাদীসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ বর্ণিত আছে। এমনিভাবে দুনিয়ায় যেসব নারীর বিবাহ হয়নি, তাদেরকেও নতুন জীবন দিয়ে কোন না কোন জান্নাতবাসীর সঙ্গে বিবাহ দেওয়া হবে। হাদীসের বিভিন্ন বর্ণনার দিকে লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, উভয় শ্রেণীর নারীই এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত, অর্থাৎ হুরগণও এবং দুনিয়ার পুণ্যবতী নারীগণও (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য রূহুল মাআনী)।
👉৩৬
فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا
ফাজা‘আলনা-হুন্না আবকা-রা।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
সুতরাং তাদেরকে বানিয়েছি কুমারী। ১০
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এদেরকে করেছি কুমারী,
✅ তাফসীরঃ
১০. কোন কোন হাদীস দ্বারা বোঝা যায়, তাদের কুমারীত্ব কখনও ক্ষুণ্ণ হবে না।
👉৩৭
عُرُبًا أَتْرَابًا
‘উরুবান আতরা-বা-।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
(স্বামীদের পক্ষে) প্রেমময়ী ও সমবয়স্কা। ১১
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
কামিনী, সমবয়স্কা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
সোহাগিনী ও সমবয়স্কা,
✅ তাফসীরঃ
১১. এর এক অর্থ হতে পারে এই যে, তারা তাদের স্বামীদের সমবয়স্কা হবে। কেননা সম বয়সীর সাথেই প্রণয়-প্রীতি জমে ভালো, সখ্য বেশি সুখকর হয়। দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে, তারা সকলে পরস্পরে সমবয়স্কা হবে। কোন কোন হাদীসে আছে, জান্নাতবাসীদেরকে তেত্রিশ বছর বয়সী করে দেওয়া হবে। এটাই পূর্ণ যৌবনের বয়স (তিরমিযী, হযরত মুআয [রাযি.] থেকে)।
👉৩৮
لِّأَصْحَابِ الْيَمِينِ
লিআসহা-বিল ইয়ামীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
সবই ডান হাত বিশিষ্টদের জন্য।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
ডান দিকের লোকদের জন্যে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
ডানদিকের লোকদের জন্যে।
👉৩৯
ثُلَّةٌ مِّنَ الْأَوَّلِينَ
ছু ল্লাতুম মিনাল আওওয়ালীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
(যাদের মধ্যে) অনেকে হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তাদের একদল হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তাদের অনেকে হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে,
👉৪০
وَثُلَّةٌ مِّنَ الْآخِرِينَ
ওয়া ছুল্লাতুম মিনাল আ-খিরীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এবং অনেকে হবে পরবর্তীদের মধ্য হতে। ১২
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং একদল পরবর্তীদের মধ্য থেকে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এবং অনেকে হবে পরবর্তীদের মধ্য হতে।
✅ তাফসীরঃ
১২. অর্থাৎ এই স্তরের মুমিন আগের যামানার লোকদের মধ্যেও অনেক হবে এবং পরের যামানার লোকদের মধ্যেও অনেক।
👉৪১
وَأَصْحَابُ الشِّمَالِ مَا أَصْحَابُ الشِّمَالِ
ওয়া আসহা-বুশশিমা-লি মাআসহা-বুশ শিমা-ল।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আর যারা বাম হাতবিশিষ্ট, কী হতভাগ্য সে বাম-হাত বিশিষ্টগণ!
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
বামপার্শ্বস্থ লোক, কত না হতভাগা তারা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আর বামদিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল!
👉৪২
فِي سَمُومٍ وَحَمِيمٍ
ফী ছামূমিওঁ ওয়া হামীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তারা থাকবে উত্তপ্ত বায়ু ও ফুটন্ত পানিতে।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তারা থাকবে প্রখর বাষ্পে এবং উত্তপ্ত পানিতে,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এরা থাকবে অত্যুষ্ণ বায়ু ও উত্তপ্ত পানিতে,
👉৪৩
وَظِلٍّ مِّن يَحْمُومٍ
ওয়া জিলিলম মিইঁ ইয়াহমূম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
কালো ধুয়ার ছায়ায়
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং ধুম্রকুঞ্জের ছায়ায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
কৃষ্ণবর্ণ ধূম্রের ছায়ায়,
👉৪৪
لَّا بَارِدٍ وَلَا كَرِيمٍ
লা-বা-রিদিওঁ ওয়ালা-কারীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
যা হবে না শীতল, না উপকারী।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
যা শীতল নয় এবং আরামদায়কও নয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
যা শীতল নয়, আরামদায়কও নয়।
👉৪৫
إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَٰلِكَ مُتْرَفِينَ
ইন্নাহুম কা-নূকাবলা যা-লিকা মুতরাফীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
ইতঃপূর্বে তারা ছিল আরাম-আয়েশের ভেতর।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তারা ইতিপূর্বে স্বাচ্ছন্দ্যশীল ছিল।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
ইতিপূর্বে এরা তো মগ্ন ছিল ভোগ-বিলাসে
👉৪৬
وَكَانُوا يُصِرُّونَ عَلَى الْحِنثِ الْعَظِيمِ
ওয়াকা-নূইউসিররূনা ‘আলাল হিনছিল ‘আজীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
অতি বড় পাপের উপর অনড় থাকত। ১৩
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তারা সদাসর্বদা ঘোরতর পাপকর্মে ডুবে থাকত।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এবং এরা অবিরাম লিপ্ত ছিল ঘোরতর পাপকর্মে।
তাফসীরঃ
১৩. অতি বড় পাপ হল কুফর ও শিরক।
👉৪৭
وَكَانُوا يَقُولُونَ أَئِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ
ওয়া কা-নূইয়াকূলূনা আইযা-মিতনা-ওয়া কুন্না-তুরা-বাওঁ ওয়া ‘ইজা-মান আইন্নালামাব‘ঊছূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এবং বলত, আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও অস্থিতে পরিণত হব, তখনও কি আমাদেরকে পুনরায় জীবিত করা হবে?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তারা বলতঃ আমরা যখন মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি পুনরুত্থিত হব?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আর এরা বলত, ‘মরিয়া অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হলেও কি উত্থিত হব আমরা ?
👉৪৮
أَوَآبَاؤُنَا الْأَوَّلُونَ
আওয়া আ-বাউনাল আওওয়ালূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এবং আমাদের বাপ-দাদাদেরকেও, যারা পূর্বে গত হয়ে গেছে?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও!
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
‘এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও ?’
👉৪৯
قُلْ إِنَّ الْأَوَّلِينَ وَالْآخِرِينَ
কুল ইন্নাল আওওয়ালীনা ওয়াল আ-খিরীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
বলে দাও, নিশ্চয়ই আগের ও পরের সমস্ত মানুষকে
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
বলুনঃ পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণ,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
বল, ‘অবশ্যই পূর্ববর্তিগণ ও পরবর্তিগণ-
👉৫০
لَمَجْمُوعُونَ إِلَىٰ مِيقَاتِ يَوْمٍ مَّعْلُومٍ
লামাজমূ‘ঊনা ইলা-মীকা-তি ইয়াওমিম মা‘লূম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
নির্দিষ্ট এক দিনের স্থিরীকৃত সময়ে একত্র করা হবে।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
সবাই একত্রিত হবে এক নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
সকলকে একত্র করা হবে এক নির্ধারিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে।
👉৫১
ثُمَّ إِنَّكُمْ أَيُّهَا الضَّالُّونَ الْمُكَذِّبُونَ
ছু ম্মা ইন্নাকুম আইইয়ুহাদ্দাললূনাল মুকাযযি বূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
অতঃপর হে অবিশ্বাসী পথভ্রষ্টগণ! অবশ্যই তোমরা
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এরপর হে বিভ্রান্ত অস্বীকারকারীরা!
👉৫২
لَآكِلُونَ مِن شَجَرٍ مِّن زَقُّومٍ
লাআ-কিলূনা মিন শাজারিম মিন ঝাক্কূম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এমন এক গাছ থেকে খাবে, যার নাম যাক্কুম। ১৪
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা অবশ্যই আহার করবে যাক্ক‚ম বৃক্ষ হতে,
✅ তাফসীরঃ
১৪. জাহান্নামে এ গাছের বিবরণ পূর্বে সুরা সাফফাত (৩৭ : ৬২) ও সূরা দুখানে (৪৪ : ৪৩) গত হয়েছে।
👉৫৩
فَمَالِئُونَ مِنْهَا الْبُطُونَ
ফামা-লিঊনা মিনহাল বুতূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এবং তা দিয়ে তোমরা উদর পূর্ণ করবে,
👉৫৪
فَشَارِبُونَ عَلَيْهِ مِنَ الْحَمِيمِ
ফাশা-রিবূনা ‘আলাইহি মিনাল হামীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তদুপরি পান করবে ফুটন্ত পানি।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতঃপর তার উপর পান করবে উত্তপ্ত পানি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
পরে তোমরা পান করবে এর ওপর অত্যুষ্ণ পানি-
👉৫৫
فَشَارِبُونَ شُرْبَ الْهِيمِ
ফাশা-রিবূনা শুরবাল হীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
পানও করবে সেইভাবে, যেভাবে পান করে তৃষ্ণার রোগে আক্রান্ত উট। ১৫
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আর পান করবে তৃষ্ণার্ত উষ্ট্রের ন্যায়।
✅ তাফসীরঃ
১৫. এর দ্বারা শোথ রোগে আক্রান্ত উটকে বোঝানো হয়েছে। এমন উট বারবার পানি পান করে, কিন্তু কিছুতেই পিপাসা মেটে না।
👉৫৬
هَـٰذَا نُزُلُهُمْ يَوْمَ الدِّينِ
হা-যা-নুঝুলুহুম ইয়াওমাদ্দীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এটাই বিচার দিবসে তাদের আপ্যায়ন।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
কেয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
কিয়ামতের দিন এটাই হবে এদের আপ্যায়ন।
👉৫৭
نَحْنُ خَلَقْنَاكُمْ فَلَوْلَا تُصَدِّقُونَ
নাহনুখালাকনা-কুম ফালাওলা-তুসাদ্দিকূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তোমরা কেন বিশ্বাস করছ না?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে। অতঃপর কেন তোমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস কর না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তবে কেন তোমরা বিশ্বাস করছো না ?
👉৫৮
أَفَرَأَيْتُم مَّا تُمْنُونَ
আফারাআইতুমমা-তুমনূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛⇛
আচ্ছা বল তো, তোমরা যে বীর্য স্খলন কর
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛⇛
তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛⇛
তোমরা কি ভেবে দেখেছ তোমাদের বীর্যপাত সম্বন্ধে ?
👉৫৯
أَأَنتُمْ تَخْلُقُونَهُ أَمْ نَحْنُ الْخَالِقُونَ
আ আনতুম তাখলুকূনাহূআম নাহনুল খা-লিকূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তা কি তোমরা সৃষ্টি কর না আমিই তার স্রষ্টা? ১৬
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা তাকে সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তা কি তোমরা সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি ?
✅ তাফসীরঃ
১৬. এর দ্বারা খোদ বীর্য সৃষ্টিও বোঝানো হতে পারে, যাতে মানুষের কোন হাত নেই অথবা বীর্য দ্বারা যে মানব শিশুর জন্ম হয়, তার সৃষ্টিও বোঝানো যেতে পারে। কেননা বীর্যের একটা বিন্দুকে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করিয়ে মানুষের রূপ দান করা, তাতে প্রাণ সঞ্চার করা এবং তাকে দেখা, শোনা ও বোঝার শক্তি দান করা আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কার পক্ষে সম্ভব?
👉৬০
نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ الْمَوْتَ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ
নাহনুকাদ্দারনা-বাইনাকুমুল মাওতা ওয়ামা-নাহনুবিমাছবূকীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আমি তোমাদের মধ্যে মৃত্যুর ফায়সালা করে রেখেছি এবং এমন কেউ নেই, যে আমাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আমি তোমাদের মধ্যে মৃত্যু নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই-
👉৬১
عَلَىٰ أَن نُّبَدِّلَ أَمْثَالَكُمْ وَنُنشِئَكُمْ فِي مَا لَا تَعْلَمُونَ
‘আলাআননুবাদ্দিলা আমছা-লাকুম ওয়া নুনশিআকুম ফী মা-লা-তা‘লামূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এ ব্যাপারে যে, আমি তোমাদের স্থলে তোমাদের মত অন্য লোক আনয়ন করব এবং তোমাদেরকে এমন কোন রূপ দান করব, যা তোমরা জান না। ১৭
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এ
ব্যাপারে যে, তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের মত লোককে নিয়ে আসি এবং তোমাদেরকে এমন করে দেই, যা তোমরা জান না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতিতে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না।
✅ তাফসীরঃ
১৭. বলা হচ্ছে যে, মানুষের সৃজন যেমন আল্লাহ তাআলারই কাজ, তেমনি তার মৃত্যু দানও তিনিই করে থাকেন। তারপর তাকে পুনরায় যে-কোনও আকৃতিতে জীবিত করে তোলার ক্ষমতাও তাঁর আছে। এ কাজে তাঁকে ব্যর্থ করে দেওয়ার শক্তি কারও নেই।
👉৬২
وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ النَّشْأَةَ الْأُولَىٰ فَلَوْلَا تَذَكَّرُونَ
ওয়া লাকাদ ‘আলিমতুমুন্নাশআতাল ঊলা-ফালাওলা-তাযাক্কারূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তোমরা তো তোমাদের প্রথম সৃজন সম্পর্কে অবগত আছ। তা সত্ত্বেও তোমরা কেন উপদেশ গ্রহণ কর না? ১৮
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা তো অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্বন্ধে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন ?
✅ তাফসীরঃ
১৮. অর্থাৎ অন্ততপক্ষে এতটুকু কথা তো তোমরাও জান যে, তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি কেবল আল্লাহ তাআলাই করেছেন। অন্য কারও তাতে কোনও অংশীদারিত্ব নেই। যখন এটা তোমরা জান, তখন কেবল তাকে মাবুদ বলে স্বীকার করাতে তোমাদের বাধা কীসের এবং তিনি যে তোমাদের মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করার ক্ষমতা রাখেন এটা বিশ্বাস করতে কেন তোমাদের এত কুণ্ঠা?
👉৬৩
أَفَرَأَيْتُم مَّا تَحْرُثُونَ
আফারাআইতুম মা-তাহরুছূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমরা জমিতে যা-কিছু বোন,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা যে বীজ বপন কর সে সম্পর্কে চিন্তা করেছ কি ?
👉৬৪
أَأَنتُمْ تَزْرَعُونَهُ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُونَ
আআনতুম তাঝরা‘ঊনাহূআম নাহনুঝঝা-রি‘ঊন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তা কি তোমরা উদগত কর, না আমিই ১৯ তার উদগতকারী?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা তাকে উৎপন্ন কর, না আমি উৎপন্নকারী ?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা কি একে অঙ্কুরিত কর, না আমি অঙ্কুরিত করি ?
✅ তাফসীরঃ
১৯. অর্থাৎ তোমরা তো জমিতে কেবল বীজ ফেল। অতঃপর সেই বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম ঘটিয়ে তাকে চারা বানানো তারপর সেই চারাকে গাছ বানিয়ে তা থেকে তোমাদের উপকারী ফল বা ফসল জন্মানোর মত ক্ষমতা কি তোমাদের ছিল? আল্লাহ তাআলা ছাড়া এমন কে আছে, যে তোমাদের বোনা বীজকে এই পরিণতিতে পৌঁছাতে পারেন?
👉৬৫
لَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَاهُ حُطَامًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُونَ
লাও নাশা-উ লাজা‘আলনা-হু হুতা-মান ফাজালতুম তাফাক্কাহূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আমি ইচ্ছা করলে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিতে পারি, ফলে তোমরা হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটা করে দিতে পারি, অতঃপর হয়ে যাবে তোমরা বিস্ময়াবিষ্ট।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আমি ইচ্ছা করলে এটাকে খড়-কুটায় পরিণত করতে পারি, তখন হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে তোমরা;
👉৬৬
إِنَّا لَمُغْرَمُونَ
ইন্না-লামুগরামূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
যে, আমরা তো দায়গ্রস্ত হয়ে পড়লাম,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
বলবেঃ আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম;
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
‘আমরা তো দায়গ্রস্ত হয়ে পড়েছি’,
👉৬৭
بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ
বাল নাহনুমাহরূমূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
বরং আমরা সম্পূর্ণ বঞ্চিত হলাম ২০!
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
বরং আমরা হূত সর্বস্ব হয়ে পড়লাম।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
বরং ‘আমরা হৃতসর্বস্ব হয়ে পড়েছি।’
✅ তাফসীরঃ
২০. অর্থাৎ এর বীজ ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনায় যে খরচ হয়েছে, একে তার দেনা মাথায় চাপল, তার ফসল না পাওয়ায় জীবিকা থেকেও বঞ্চিত হলাম! এখন তো না খেয়ে কাটাতে হবে। -অনুবাদক
👉৬৮
أَفَرَأَيْتُمُ الْمَاءَ الَّذِي تَشْرَبُونَ
আফারাআইতুমুল মাআল্লাযী তাশরাবূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আচ্ছা বল তো, এই যে পানি তোমরা পান কর
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা যে পানি পান কর তা সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ ?
👉৬৯
أَأَنتُمْ أَنزَلْتُمُوهُ مِنَ الْمُزْنِ أَمْ نَحْنُ الْمُنزِلُونَ
আ আনতুম আনঝালতুমূহু মিনাল মুঝনি আম নাহনুল মুনঝিলূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
মেঘ থেকে তা কি তোমরা বর্ষণ করাও, না আমিই তার বর্ষণকারী?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষন করি?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা কি তা মেঘ হতে নামাইয়া আন, না আমি তা বর্ষণ করি?
👉৭০
لَوْ نَشَاءُ جَعَلْنَاهُ أُجَاجًا فَلَوْلَا تَشْكُرُونَ
লাও নাশাউ জা‘আলনা-হু উজা-জান ফালাওলা-তাশকুরূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আমি ইচ্ছা করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কি তোমরা শোকর আদায় কর না?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আমি ইচ্ছা করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না ?
👉৭১
أَفَرَأَيْتُمُ النَّارَ الَّتِي تُورُونَ
আফারাআইতুমুন্না-রাল্লাতী তূরূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আচ্ছা বল তো, এই যে আগুন তোমরা জ্বালাও,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা যে অগ্নি প্রজ্বলিত কর তা লক্ষ্য করে দেখেছ কি ?
👉৭২
أَأَنتُمْ أَنشَأْتُمْ شَجَرَتَهَا أَمْ نَحْنُ الْمُنشِئُونَ
আ আনতুম আনশা’তুম শাজারাতাহাআম নাহনুল মুনশিঊন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তার বৃক্ষ কি তোমরা সৃষ্টি ২১ কর, না আমিই তার স্রষ্টা?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ, না আমি সৃষ্টি করেছি ?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরাই কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি ?
✅ তাফসীরঃ
২১. এর দ্বারা ইশারা ‘মারখ’ ও ‘আফার’ গাছের দিকে। এসব গাছ আরব দেশসমূহে জন্মায়। এর ডালা ঘষলে আগুন জ্বলে ওঠে। আরববাসী এর দ্বারা চকমকি পাথর বা দিয়াশলাইয়ের কাজ নিত। সূরা ইয়াসীনেও (৩৬ : ৮০) এর উল্লেখ রয়েছে।
👉৭৩
نَحْنُ جَعَلْنَاهَا تَذْكِرَةً وَمَتَاعًا لِّلْمُقْوِينَ
নাহনুজা‘আলনা-হা-তাযকিরাতাওঁওয়া মাতা-‘আল লিলমুকবিন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আমিই তাকে বানিয়েছি উপদেশের উপকরণ এবং মরুচারীদের জন্য উপকারী বস্তু। ২২
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আমি সেই বৃক্ষকে করেছি স্মরণিকা এবং মরুবাসীদের জন্য সামগ্রী।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আমি এটাকে করেছি নিদর্শন এবং মরুচারীদের প্রয়োজনীয় বস্তু।
✅ তাফসীরঃ
২২. উপদেশের উপকরণ বলা হয়েছে এ কারণে যে, এর ভেতর চিন্তা করলে আল্লাহ তাআলার কুদরত উপলব্ধি করা যায়। কিভাবে তিনি তাজা গাছ থেকে আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন! দ্বিতীয়ত এর দ্বারা জাহান্নামের আগুনের কথাও স্মরণ হয়, ফলে তা থেকে বাঁচার চিন্তা জাগ্রত হয়। এ গাছ যদিও সকলের জন্যই আগুন জ্বালানোর কাজে আসে, কিন্তু এক সময় মরুভূমিতে যারা সফর করত, তাদের জন্য এটা অতি বড় নি‘আমত ছিল। ভ্রমণকালে যখন আগুন জ্বালানোর প্রয়োজন হত, তখন তারা এর দ্বারা সে প্রয়োজন মিটিয়ে ফেলত। এ কারণেই বিশেষভাবে মরুচারীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
👉৭৪
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
ফাছাববিহবিছমি রাব্বিকাল ‘আজীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
সুতরাং (হে রাসূল!) তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নাম নিয়ে তার তাসবীহ পাঠ কর।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
সুতরাং তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
👉৭৫
۞ فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَاقِعِ النُّجُومِ
ফালাউকছিমুবিমাওয়া-কি‘ইননুজূম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
যে সকল স্থানে নক্ষত্র পতিত হয় ২৩ আমি তার শপথ করে বলছি,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আমি শপথ করছি নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের,
✅ তাফসীরঃ
২৩. এখান থেকে কুরআন মাজীদের সত্যতা এবং এটা যে আল্লাহ তাআলার কালাম, তা প্রমাণ করা উদ্দেশ্য। মক্কা মুকাররমার কাফেরগণ অনেক সময় বলত, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একজন অতীন্দ্রিয়বাদী এবং এ কুরআন মূলত অতীন্দ্রিয়বাদীদের কথা (নাউযুবিল্লাহ)। অতীন্দ্রিয়বাদীরা যেসব ভবিষ্যদ্বাণী করত, তাতে তারা জিন ও শয়তানদের সাহায্য নিত। কুরআন মাজীদ বিভিন্ন স্থানে জানিয়ে দিয়েছে যে, শয়তানদেরকে আকাশের কাছে গিয়ে সেখানকার কথাবার্তা শোনার আর সুযোগ দেওয়া হয় না। কোন শয়তান সে চেষ্টা করলে জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড (شهاب ثاقب) ছুঁড়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয় (দেখুন সূরা হিজর ১৫ : ১৮; সূরা সাফফাত ৩৭ : ১০)। সাধারণ কথাবার্তায় شهاب ثاقب-কে ‘নক্ষত্রের পতন’ শব্দে ব্যক্ত করা হয়, তাই কুরআন মাজীদ নক্ষত্রের উল্লেখ করত একথাও জানিয়ে দিয়েছে যে, তাকে শয়তানদের থেকে হেফাজতের জন্যও ব্যবহার করা হয় (সূরা সাফফাত ৩৭ : ৭; সূরা মুলক ৬৭ : ৫)। সুতরাং জিন ও শয়তান যখন আকাশ পর্যন্ত পৌঁছতেই পারে না, তখন তাদের পক্ষে কুরআনের মত পরিপক্ব ও সত্য বাণী পেশ করাই সম্ভব নয়। সেই প্রসঙ্গেই এখানে নক্ষত্রের পতন স্থলসমূহের শপথ করে ইশারা করা হয়েছে যে, তোমরা যদি গভীরভাবে চিন্তা কর, তবে পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবে, কুরআন মাজীদ অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ বাণী। কোন অতীন্দ্রিয়বাদী এরূপ বাণী কখনও তৈরি করতে পারবে না। কেননা অতীন্দ্রিয়বাদী যা বলে তা শয়তানদের সাহায্য নিয়ে বলে। আর এসব নক্ষত্র শয়তানদেরকে ঊর্ধ্ব জগতে পৌঁছা হতে নিবৃত্ত রাখে।
👉৭৬
وَإِنَّهُ لَقَسَمٌ لَّوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ
ওয়া ইন্নাহূলাকাছামুল লাও তা‘লামূনা ‘আজীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আর তোমরা যদি বোঝ, তো এটা এক মহা শপথ, ২৪
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ-যদি তোমরা জানতে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
অবশ্যই এটা এক মহাশপথ, যদি তোমরা জানতে-
✅ তাফসীরঃ
২৪. এটি একটি অন্তর্বর্তী বাক্য। এতে নক্ষত্র পতনের শপথ যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ সে দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা এ শপথের মাধ্যমে জানান দেওয়া হচ্ছে যে, নক্ষত্র পতনের স্থানসমূহ সাক্ষ্য দেয় কোন অতীন্দ্রিয়বাদীর পক্ষে এরূপ বাণী তৈরি করা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত নক্ষত্ররাজির ব্যবস্থাপনা ও নিয়ম-শৃঙ্খলা অত্যন্ত পরিপক্ব ও সুসংহত। এর ভেতর কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে না। কুরআন মাজীদও তার মত এক পরিপক্ব ও সুবিন্যস্ত বাণী, যা এক সুচারু ব্যবস্থাপনার অধীনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি নাযিল করা হয়েছে।
👉৭৭
إِنَّهُ لَقُرْآنٌ كَرِيمٌ
ইন্নাহূলাকুরআ-নুন কারীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
নিশ্চয়ই এটা অতি সম্মানিত কুরআন,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
নিশ্চয়ই এটা সম্মানিত কুরআন,
👉৭৮
فِي كِتَابٍ مَّكْنُونٍ
ফী কিতা-বিম মাকনূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
যা এক সুরক্ষিত কিতাবে (পূর্ব থেকেই) লিপিবদ্ধ আছে।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
যা আছে এক গোপন কিতাবে,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে।
👉৭৯
لَّا يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ
লা-ইয়ামাছছুহূইল্লাল মুতাহহারূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
একে স্পর্শ করে কেবল তারাই, যারা অত্যন্ত পবিত্র, ২৫
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
যারা পূত-পবিত্র তারা ব্যতীত অন্য কেউ তা স্পর্শ করে না।
✅ তাফসীরঃ
২৫. শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যা অনুযায়ী এর দ্বারা ফেরেশতাদেরকে বোঝানো হয়েছে। কাফেরগণ প্রশ্ন করত, আমরা কিভাবে বিশ্বাস করব, এ কুরআন কোনরূপ রদ বদল ছাড়া তার প্রকৃত রূপেই আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে, মাঝখানে শয়তান বা অন্য কেউ এতে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করেনি? এ আয়াতসমূহ দ্বারা তার উত্তর দেওয়া হয়েছে যে, কুরআন মাজীদ লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ আছে এবং তা পবিত্র ফেরেশতাগণ ছাড়া অন্য কেউ স্পর্শ করতে পারে না। এখানে ‘অত্যন্ত পবিত্র’ দ্বারা যদিও ফেরেশতাদের বোঝানো হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে ইঙ্গিত নিহিত রয়েছে যে, ঊর্ধ্বজগতে যেমন পবিত্র ফেরেশতাগণই একে স্পর্শ করে, তেমনি দুনিয়ায়ও একে কেবল তাদেরই স্পর্শ করা উচিত, যারা পাক-পবিত্র। বিভিন্ন সহীহ হাদীসে একে বিনা অযুতে স্পর্শ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
👉৮০
تَنزِيلٌ مِّن رَّبِّ الْعَالَمِينَ
তানঝীলুম মির রাব্বিল ‘আ-লামীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এটা জগতসমূহের প্রতিপালকের পক্ষ হতে অল্প অল্প করে অবতীর্ণ।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এটা জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট হতে অবতীর্ণ।
👉৮১
أَفَبِهَـٰذَا الْحَدِيثِ أَنتُم مُّدْهِنُونَ
আফা বিহা-যাল হাদীছিআনতুম মুদহিনূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তবুও কি তোমরা এ বাণীকে অবহেলা কর?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তবুও কি তোমরা এই বাণীর প্রতি শৈথিল্য পদর্শন করবে?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তবুও কি তোমরা এই বাণীকে তুচ্ছ গণ্য করবে ?
👉৮২
وَتَجْعَلُونَ رِزْقَكُمْ أَنَّكُمْ تُكَذِّبُونَ
ওয়া তাজ‘আলূনা রিঝকাকুম আন্নাকুম তুকাযযি বূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এবং তোমরা (এর প্রতি) অবিশ্বাসকেই তোমাদের উপজীব্য বানিয়ে নিয়েছ?
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং একে মিথ্যা বলাকেই তোমরা তোমাদের ভূমিকায় পরিণত করবে?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এবং তোমরা মিথ্যারোপকেই তোমাদের উপজীব্য করে নিয়েছ !
👉৮৩
فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ
ফালাও লাইযা-বালাগাতিল হুলকূম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
অতঃপর এমন কেন হয় না যে, যখন (কারও) প্রাণ কণ্ঠাগত হয়,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
পরন্তু কেন নয়-প্রাণ যখন কণ্ঠাগত হয়
👉৮৪
وَأَنتُمْ حِينَئِذٍ تَنظُرُونَ
ওয়া আনতুম হীনাইযিন তানজু রূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এবং তোমরা (বিমর্ষ মনে তার দিকে) তাকিয়ে থাক,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং তোমরা তাকিয়ে থাক,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এবং তখন তোমরা তাকিয়ে থাক,
👉৮৫
وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنكُمْ وَلَـٰكِن لَّا تُبْصِرُونَ
ওয়া নাহনুআকরাবুইলাইহি মিনকুম ওয়ালা-কিল্লা-তুবসিরূন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এবং তোমাদের চেয়ে আমিই তার বেশি কাছে থাকি, কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আর আমি তোমাদের অপেক্ষা তার নিকটতর, কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না।
👉৮৬
فَلَوْلَا إِن كُنتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ
ফালাওলাইন কুনতুম গাইরা মাদীনিন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
যদি তোমাদের হিসাব-নিকাশ হওয়ার না-ই থাকে,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তোমরা যদি কর্তৃত্বাধীন না হও!
👉৮৭
تَرْجِعُونَهَا إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
তার জি‘ঊনাহাইন কুনতুম সা-দিকীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তবে তোমরা সেই প্রাণকে ফিরিয়ে আনছ না কেন যদি তোমরা সত্যবাদী হও? ২৬
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তবে তোমরা এই আত্মাকে ফিরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও ?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তবে তোমরা তা ফিরাও না কেন ? যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
✅ তাফসীরঃ
২৬. কাফেরগণ যে কুরআন মাজীদের উপর ঈমান আনতে অস্বীকার করত, তার একটা বড় কারণ ছিল ‘আমরা মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত হব না’ তাদের এই দাবি। এ সূরারই ৪৫ নং আয়াতে এটা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এস্থলে সে বিষয়েই আলোকপাত করছেন। বলা হচ্ছে, এ দুনিয়ায় যে-ই আসে, একদিন না একদিন তার মৃত্যু ঘটে। এটা বাস্তব সত্য, যা তোমরাও স্বীকার কর। তো যখন কারও মৃত্যু আসে, তখন তার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও তার চিকিৎসক সর্ব প্রযত্নে যে-কোনও উপায়ে তাকে মৃত্যু থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে, কিন্তু মৃত্যু এসেই যায় এবং সকলে অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে, যদি মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত হওয়ার ও হিসাব-নিকাশ হওয়ার ব্যাপার না-ই থাকে, তবে প্রতিটি মানুষকে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ কেন করতে হয়? এবং তোমরা তাকে মৃত্যু হতে রক্ষা করতে কেন এত অপারগ? দুনিয়ায় জীবন ও মৃত্যুর এই যে অমোঘ বিধান কার্যকর রয়েছে, এটাই প্রমাণ করে, জীবন ও মৃত্যুর মালিক বিশ্বজগতকে অহেতুক সৃষ্টি করেননি। তিনি সৃষ্টি করেছেন এই উদ্দেশ্যে যে, মানুষকে জীবন ভরের জন্য অবকাশ দিয়ে পরিশেষে হিসাব নেওয়া হবে সে সেই অবকাশকে কী কাজে লাগিয়েছে।
👉৮৮
فَأَمَّا إِن كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِينَ
ফাআম্মাইন কা-না মিনাল মুকাররাবীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
অতপর সে (মৃত ব্যক্তি) যদি আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের একজন হয়,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়;
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
যদি সে নৈকট্যপ্রাপ্তদের একজন হয়,
👉৮৯
فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّتُ نَعِيمٍ
ফারাওহুওঁ ওয়া রাই হা-নুওঁ ওয়া জান্নাতুনা‘ঈম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তবে (তার জন্য) শুধু আরাম, সুরভি ও নি‘আমতপূর্ণ জান্নাত।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নেয়ামতে ভরা উদ্যান।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তবে তার জন্যে রয়েছে আরাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও সুখদ উদ্যান;
👉৯০
وَأَمَّا إِن كَانَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ
ওয়া আম্মাইন কা-না মিন আসহা-বিল ইয়ামীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আর যদি হয় ডান হাত বিশিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আর যদি সে ডান পার্শ্বস্থদের একজন হয়,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
আর যদি সে ডানদিকের একজন হয়,
👉৯১
فَسَلَامٌ لَّكَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ
ফাছালা-মুল্লাকা মিন আসহা-বিল ইয়ামীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তবে (তাকে বলা হবে যে,) তোমার জন্য রয়েছে শান্তি, যেহেতু তুমি ডান হাত বিশিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তবে তাকে বলা হবেঃ তোমার জন্যে ডানপার্শ্বসস্থদের পক্ষ থেকে সালাম।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তবে তাকে বলা হবে, ‘হে দক্ষিণ পার্শ্ববর্তী! তোমার প্রতি শান্তি।’
👉৯২
👉
وَأَمَّا إِن كَانَ مِنَ الْمُكَذِّبِينَ الضَّالِّينَ
ওয়া আম্মাইন কা-না মিনাল মুকাযযি বীনাদ্দাল্লীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আর যদি হয় সেই পথভ্রষ্টদেরঅন্তর্ভুক্ত, যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করত,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয়,
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
কিন্তু সে যদি সত্য অস্বীকারকারী ও বিভ্রান্তদের অন্যতম হয়,
👉৯৩
فَنُزُلٌ مِّنْ حَمِيمٍ
ফানুঝুলুম মিন হামীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
তবে (তার জন্য আছে) ফুটন্ত পানির আপ্যায়ন,
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
তবে তার আপ্যায়ন হবে উত্তপ্ত পানি দ্বারা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
তবে রয়েছে আপ্যায়ন অত্যুষ্ণ পানির দিয়ে,
👉৯৪
وَتَصْلِيَةُ جَحِيمٍ
ওয়া তাসলিয়াতুজাহীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
আর জাহান্নামে প্রবেশ।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এবং দহন জাহান্নামের;
👉৯৫
إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ حَقُّ الْيَقِينِ
ইন্না হা-যা-লাহুওয়া হাক্কুল ইয়াকীন।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এটাই যথার্থ সুনিশ্চিত বিষয়। ২৭
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
এটা ধ্রুব সত্য।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
এটা তো ধ্রুব সত্য।
✅ তাফসীরঃ
২৭. অর্থাৎ হে নবী! পুণ্যবান ও পাপিষ্ঠদের এই যে পরিণাম আপনাকে জানালাম, আখিরাতে নেককারদের যে পুরস্কার ও বদকারদের যে শাস্তি সম্পর্কে অবহিত করলাম, এটা সন্দেহাতীত সত্য, যা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। -অনুবাদক
👉৯৬
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
ফাছাব্বিহবিছমি রাব্বিকাল ‘আজীম।
অর্থঃ
মুফতী তাকী উসমানী⇛
সুতরাং (হে রাসূল!) তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নাম নিয়ে তার তাসবীহ পাঠ কর।
মাওলানা মুহিউদ্দিন খান⇛
অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন⇛
অতএব তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
Frequently Asked Questions (FAQ) -
সুরা ওয়াকিয়াহ সত্যিই অভাব দূর করে?
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'যে ব্যক্তি সূরা ওয়াক্বিয়াহ পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না। ' এই সূরা পাঠ করলে দরিদ্রতা গ্রাস করতে পারেনা। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)
সূরা ওয়াকিয়াহ কখন পড়তে হয়?
মাগরিবের পর থেকে রাতের যে কোন সময় সূরা ওয়াকিয়া পড়লে এর ফযীলত “দারিদ্রতা দূর হওয়া” আদায় হবে ইনশাআল্লাহ।
‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াকিয়াহ তেলাওয়াত করবে, তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না।’ (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান)
0 Comments