সম্পত্তির ভাগ কে কতটা পাবে, মুহূর্তেই জানা যাবে
মৃত ব্যক্তির স্বজনদের মধ্যে সম্পত্তির ভাগ কারা পাবে এবং কতটুকু পাবে, সে হিসাব জানা যাচ্ছে সরকারের ‘উত্তরাধিকার ডট বাংলা’ ওয়েবসাইটে।
ইসলামে উত্তরাধিকার আইন বলতে কী বুঝায়? উত্তরাধিকার আইন ফারায়েজ আইন বলে পরিচিত।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি সেবা
ভূমি পরিমাপ - কাঠা, বিঘা, একর অনুযায়ী পরিমাণ
দাদাবাড়ির জমি মাপবেন? সবার আগে আমাদের কিছু বিষয় জানতে হবে আপনাকে
যেমন- ১ একর = ১০০ শতাংশ,
অর্থাৎ ১ শতাংশ = ১ /১০০ ইত্যাদি
নিজের দাদার জমি বাবার পরে আপনাকেই খেয়াল রাখতে হবে।
তাই Jaiga Jomir Porimap বা মাপার আগে যে বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে-
জমি কেনা বা রেজিস্ট্রির আগে করনীয় জানা জরুরি।।
✅ সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে একজন মানুষ শেষ বয়সে এসে কষ্টের টাকায় বাড়ি বা এক খন্ড জমি কিনে যাতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিশ্চিন্তে তার মাথা গুজার একটু জায়গা থাকে। কিন্তু জমি কিনেই ঝামেলায় পড়েছেন অনেকে মানে ঝামেলা কিনেছেন । অন্যদিকে কেউ আবার হয়েছেন সর্বশান্ত।
প্রথমত জমি সংক্রান্ত বিষয়ে স্বল্প জ্ঞান ও অসতর্কতার কারণেই মানুষ এই ঝামেলায় পড়ে। তাই জমি কেনার আগে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।
চলুন তবে জেনে নেয়া যাক জমি রেজিস্ট্রির আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি-:
১. অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে জরিপের মাধ্যমে প্রণিত রেকর্ড। খতিয়ান ও নকশা যাচাই করে নিতে হবে।
২. জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর ও উক্ত দাগে জমির মোট পরিমাণ দেখে নিতে হবে।
৩. জমি কেনার আগে উক্ত জমির সিএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ড, আরএস রেকর্ড এবং মাঠ পর্চাগুলো ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
৪. বিক্রেতা যদি জমিটির মালিক ক্রয়সূত্রে হয়ে থাকেন তাহলে তার কেনার দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে যিনি বেচবেন তার মালিকানা সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।
৫. জমির বিক্রিকারী উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়ে থাকলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ানে তার নাম আছে কিনা তা ভালো ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি সর্বশেষ খতিয়ানে বিক্রেতার নাম না থাকে,
তাহলে তিনি যার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়েছেন তার মূল মালিকের সংঙ্গে বিক্রেতার নামের যোগসূত্র কিংবা রক্তের সস্পর্ক আছে কিনা বিষয়টি ভালো ভাবে যাচাই করে নিতে হবে।
যদি মাঠ পর্চার মন্তব্য কলামে কিছু লেখা থাকে যেমন (AD) তাহলে বুঝতে হবে উক্ত খতিয়ানের বিরুদ্ধে সত্যায়ন বা শুদ্ধতার পর্যায়ে আপত্তি রয়েছে, সেক্ষেত্রে জমি ক্রয়ের আগে জরিপ অফিসে জমিটির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিতে হবে।
৬. তবে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রিকারীর শরিকদের সঙ্গে জমি বিক্রিকারীর সম্পত্তি ভাগাভাগির বণ্টননামা বা ফারায়েজ দেখে নিতে হবে।
৭. জমি বিক্রিকারীর নিকট থেকে সংগৃহীত দলিল, বায়না দলিল, খতিয়ান, মাঠ পর্চা ইত্যাদি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে তলবকারী বা স্বত্বলিপি রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে।
৮. জমি কেনার ক্ষেত্রে যিনি জমি কিনবেন তাকে মনে রাখতে হবে যে ১৯১৩ সালের সরকারি পাওনা/দাবি আদায় আইনের ৭ ধারায় বলা আছে সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয় ।
CS, RS, SA, PS, BS জরিপ।
✅ ভূমি জরিপ অর্থাৎ CS, RS, SA, PS, BS জরিপ।
ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের দেশে পরিচালিত বিভিন্ন সময় ভূমি জরিপ বা রেকর্ড হয়েছে। এগুলো একেক সময় একেক নামে পরিচালিত হয়েছে ।
এ নামগুলো হচ্ছে:
👉 CS - (সিএস) Cadastral Survey (১৮৮৮সন-১৯৪০সন) একে ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ বলা হয় যা ১৮৮৮ (ভূমি মন্ত্রণালয় অুনসারে ১৮৮৭) সাল হতে ১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত হয়। ।
👉 SA- (এসএ) State Acquisition Survey (১৯৫৬সন-১৯৬২সন)
১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
👉 PS- (পি এস) Pakistan Survey
এস.এ. জরিপকেই পি.এস. জরিপ বলে। ১৯৫৬ হতে ১৯৬২ পর্যন্ত এই জরিপ পরিচালিত হয়।
👉 RS- (আরএস) Revisional Survey
(১৯৯০ সন-
সি.এস. জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমির অবস্থা, প্রকৃতি, মালিক, দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার লক্ষ্যে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়।
👉 City ( সিটি ) জরিপ : এটির আরেক নাম ঢাকা মহানগর জরিপ ।
সিটি জরিপ এর আর এক নাম ঢাকা মহানগর জরিপ। আর.এস. জরিপ এর পর বাংলাদেশ সরকার কর্তিক অনুমতি ক্রমে এ জরিপ ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। এ যবত কালে সর্বশেষ ও আধুনিক জরিপ এটি। এ জরিপের পরচা কম্পিউটার প্রিন্ট এ পকাশিত হয়।
👉 BS- (বি এস) Bangladesh Survey
জরিপ সম্পর্কে আরো জানুন
✅ ভূমি পরিমাপ করার চেইন (গান্টার শিকল) পদ্ধতি।।
ভূমি পরিমাপ করার বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হচ্ছে গান্টার শিকল পদ্ধতি। ভূমি পরিমাপের সঠিক ও সহজ করার লক্ষে ইংরেজ বিজ্ঞানী এডমন্ড গান্টা যে পদ্ধতি আবিস্কার করেন তাকে গান্টার শিকল বলা হয়ে থাকে।
তিনি ভূমি পরিমাপের জন্য ইস্পাত দ্বারা এক ধরণের শিকল আবিস্কার করেন।
তার নাম অনুসারে জমি মাপের এই পদ্ধতিকে নামকরণ করা হয় গান্টার শিকল। বর্তমানে এই পদ্ধতি বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় জমি পরিমাপের পদ্ধতি হচ্ছে গান্টার শিকল। একর,শতক ও মাইলষ্টোন বসানোর জন্য এই পদ্ধতি অত্যান্ত উপযোগী।
গান্টার শিকলের দৈর্ঘ ২০.৩১ মিটার (প্রায়) বা ৬৬ ফুট। এই শিকলটি ১০০ টি ক্ষুদ্রভাগে বিভক্ত থাকে,তাই গান্টার শিকল দিয়ে জমি পরিমাপ করা সুবিধাজনক।
এই শিকলের প্রতিটি ভাগকে লিঙ্ক বা জরীপ বা কড়ি ইত্যাদি বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।
গান্টার শিকলে ১০ লিংক বা ৭৯.২ ইঞ্চি পরপর নস বা ফুলি স্থাপন করা হয়।
✍️ চেইন বা শিকলের একক হচ্ছে লিংক। এক শিকল বা এক চেইনে একশত লিংক থাকে। সে অনুসারে হিসাবগুলো নিম্নরুপ:
১ লিংক = ৭.৯ ইঞ্চি।
৫ লিংক = ৩ ফুট ৩.৬ ইঞ্চি।
১০ লিংক = ৬ ফুট ৭.২ ইঞ্চি।
১৫ লিংক = ৯ ফুট ১০.৮ ইঞ্চি।
২০ লিংক = ১৩ ফুট ২.৪ ইঞ্চি।
২৫ লিংক = ১৬ ফুট ৬.০ ইঞ্চি।
৪০ লিংক = ২৬ ফুট ৪.৮ ইঞ্চি।
৫০ লিংক = ৩৩ ফুট।
১০০ লিংক = ৬৬ইঞ্চি।
১০০ লিংক = ১ গান্টার শিকল বা ১ চেইন।
১০০০ বর্গলিংক = এক শতক।
১,০০,০০০ বর্গলিংক = এক একর।
“দলিল” কি বা কাকে বলে ?
যে কোন লিখিত বিবরণ আইনগত সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য তাকে দলিল বলা হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য যে চুক্তিপত্র সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করেন সাধারন ভাবে তাকে দলিল বলে।
দলিলের প্রকারভেদ
১.ক.সাফকবলা দলিল
খ.দানপত্র দলিল
গ. হেবা দলিল
ঘ. হেবা বিল এওয়াজ
ঙ. এওয়াজ দলিল
চ.বন্টননামা দলিল
ছ. অছিয়তনামা দলিল
জ. উইল দলিল
ঝ. নাদাবী দলিল
ঞ. বয়নামা দলিল
ট. দখলনামা দলিল
ঠ. রায় দলিল
ড. ডিক্রি দলিল
ঢ. আরজি দলিল
ণ. আদালত যোগে সাফকবলা দলিল
ত.বায়নাপত্র দলিল
থ.বেনামী দলিল
জমির দলিলে ভুল হলে সহজে সংশোধনের উপায় জেনে নিন
জমি রেজিস্ট্রি করার পর অনেক সময় দেখা যায় দলিলে কোন জায়গার হয়তো ভুল হয়েছে। এ নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।
সাধারণ নাগরিকগণ এখনও মনে করে থাকে যে, জমির দলিল একবার ভুল হয়ে গেলে তা আর সংশোধন করা যায়-এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা –
জমির দলিলে দাগ নম্বর ভুল হলে সংশোধনের উপায় আছে ।
দলিল রেজিষ্ট্রির পর তাতে দাগ, খতিয়ান, মৌজা, চৌহদ্দি বা নামের বানানে কোন প্রকার ভুল ধরা পড়লে ৩ বছরের মধ্যে দেওয়ানি আদালতে দলিল সংশোধনের মামলা করতে হবে।
৩ বছর পর এই ধরনের মামলা তামাদির কারণে বারিত হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সংশোধন মামলা করা যায় না,
তবে তখন ঘোষণামূলক মামলা করা যায়।
এক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক প্রদানকৃত মামলার রায়ই হচ্ছে সংশোধন দলিল।
রায়ের একটি সার্টিফাইড কপি আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিষ্টার এর কাছে পাঠানো হলে সাব-রেজিষ্টার উক্ত রায়ের আলোকে সংশ্লিষ্ট ভলিউম সংশোধন করে নিবেন।
এক্ষেত্রে আর নতুন করে কোন দলিল করার প্রয়োজন নেই।
0 Comments